সর্বশেষ প্রকাশিত

সর্বোচ্চ-সর্বনিম্ন বেতন অনুপাত ১:৪ করার প্রস্তাব ২০২৫ । ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন পে স্কেল দাবিতে সংবাদ সম্মেলন কাল?

সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান বেতন বৈষম্য দূর করে ন্যায্যতার ভিত্তিতে বৈষম্যমুক্ত নতুন পে স্কেল ঘোষণার দাবিতে মাঠে নামছে ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী ফোরাম। এই দাবি নিয়ে আগামী ১০ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করবে সংগঠনটি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নতুন পে স্কেলে তাদের মূল দাবি থাকবে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের অনুপাত ১:৪ করা। এক্ষেত্রে, তারা সর্বোচ্চ বেতন ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন বেতন ৩২ হাজার টাকা করার প্রস্তাবনা দেবে।

মূল দাবিগুলো

১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সংবাদ সম্মেলনে তাদের পক্ষ থেকে যে মূল দাবিগুলো উত্থাপন করা হবে, তা হলো:

  • ন্যায্যতার ভিত্তিতে বৈষম্যমুক্ত পে স্কেল ঘোষণা।
  • সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের অনুপাত ১:৪ করা (সর্বোচ্চ ১,২৮,০০০ টাকা ও সর্বনিম্ন ৩২,০০০ টাকা)।
  • সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান গ্রেড সংখ্যা ২০ থেকে কমিয়ে ১২-১৫টি করা।
  • হরণকৃত টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল।
  • এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি বাস্তবায়ন।
  • বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যমান ভাতাসমূহ পুনর্নির্ধারণ ও শতভাগ পেনশন প্রবর্তন।

সংগঠনটির অভিযোগ, বেতন বৈষম্যের কারণেই সাধারণ কর্মচারীদের পে স্কেল বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা যায়। তাদের মতে, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর পর বেতন স্কেল নিয়ে আগ্রহী হন। কিন্তু নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য সংসার চালানো এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।

এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ফোরামটি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছে এবং তাদের দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানাবে।

খুবই যৌক্তিক দাবি। ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী ফোরামের দেওয়া তথ্য ও প্রস্তাবের ভিত্তিতে এবং সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত ১:৪ ধরে নিচে একটি প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো তৈরি করা হলো। যেহেতু গ্রেড সংখ্যা ২০ থেকে কমিয়ে ১২-১৫টি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, আমরা এখানে ১৫টি গ্রেড ধরে একটি নমুনা কাঠামো তৈরি করলাম।


প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো: গ্রেড সংখ্যা ১৫, সর্বোচ্চ-সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত ১:৪

প্রস্তাবিত গ্রেড পে স্কেল (টাকায়) গ্রেড পরিবর্তন (আগের ২০ গ্রেডের সঙ্গে তুলনা)
১,২৮,০০০/- (পূর্বের ১ গ্রেডের নতুন স্কেল)
৯৬,০০০/- (পূর্বের ২-৩ গ্রেডের সমতুল্য)
৮৮,০০০/- (পূর্বের ৪ গ্রেডের সমতুল্য)
৮০,০০০/- (পূর্বের ৫ গ্রেডের সমতুল্য)
৭২,০০০/- (পূর্বের ৬ গ্রেডের সমতুল্য)
৬৪,০০০/- (পূর্বের ৭-৮ গ্রেডের সমতুল্য)
৫৬,০০০/- (পূর্বের ৯ গ্রেডের সমতুল্য)
৫০,০০০/- (পূর্বের ১০ গ্রেডের সমতুল্য)
৪৬,০০০/- (পূর্বের ১১ গ্রেডের কাছাকাছি)
১০ ৪২,০০০/- (পূর্বের ১২ গ্রেডের কাছাকাছি)
১১ ৩৮,০০০/- (পূর্বের ১৩-১৪ গ্রেডের কাছাকাছি)
১২ ৩৫,০০০/- (পূর্বের ১৫-১৬ গ্রেডের কাছাকাছি)
১৩ ৩৩,৫০০/- (পূর্বের ১৭-১৮ গ্রেডের কাছাকাছি)
১৪ ৩২,৭৫০/- (পূর্বের ১৯ গ্রেডের কাছাকাছি)
১৫ ৩২,০০০/- (পূর্বের ২০ গ্রেডের নতুন স্কেল)

কাঠামোর মূল বৈশিষ্ট্য:

১. অনুসৃত অনুপাত: এই কাঠামোতে সর্বোচ্চ বেতন (১,২৮,০০০ টাকা) এবং সর্বনিম্ন বেতনের (৩২,০০০ টাকা) অনুপাত ঠিক ১:৪ রাখা হয়েছে, যা ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী ফোরামের প্রধান প্রস্তাব।

২. গ্রেড হ্রাস: বিদ্যমান ২০টি গ্রেডকে কমিয়ে ১৫টি গ্রেড এ নিয়ে আসা হয়েছে, যা গ্রেড কমানোর প্রস্তাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

৩. বৈষম্য হ্রাস: গ্রেড কমিয়ে ফেলায় এবং অনুপাত ১:৪ করায়, উচ্চ ও নিম্ন গ্রেডের বেতনের ব্যবধান (difference) কমে আসে। এতে নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন সহজ হবে।

৪. বেতনের সমতা: নতুন ১৫টি গ্রেডে বেতনের পার্থক্যগুলো তুলনামূলকভাবে পরিমার্জিত ও সুষম রাখা হয়েছে। এতে সকল গ্রেডে একটি ন্যায্য পার্থক্য বজায় থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *