Mixed Content । বিবিধ

New Service rules bd 2025 । ১৪ দিনের চাকরি হতে বরখাস্ত করা যাবে?

নতুন সরকারি চাকরি আইনে বেশি কিছু বিষয় অস্পষ্ট রয়েছে নিচের শ্রেণীর বা অধীনস্ত কর্মচারীদের ভোগাবে এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চাপে ফেলে কার্যসাধন করতে সহজসাধ্য বোধ করবে–সরকারি চাকরি আইন ২০২৫

দুর্নীতি, ঘুষ, তদবিরের বিষয়ে নীরবতা আছে? হ্যাঁ। সরকারি চাকরি আইন-২০২৫-এ দুর্নীতি, চুরি, তদবির বাণিজ্য বা ঘুষ সংক্রান্ত অপরাধের বিচার বা শাস্তির বিষয়ে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক। দেশে এত দুর্নীতি হয়েছে যে, মানুষ এখন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের নাম শুনলে গালি দিতে থাকে অথচ দুর্নীতি নিরসনে কোন স্পষ্ট কথা বার্তা নাই।

অনানুগত্যের অজুহাতে শাস্তি দিবে সরকার? এই আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনো কর্মচারী “অনানুগত্য প্রকাশ” করেন, তাহলে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ, বরখাস্ত অথবা নিম্নতম বেতন গ্রেডে নামিয়ে আনা যাবে। কিন্তু কোথাও স্পষ্ট করে বলা হয়নি—”অনানুগত্য” বলতে কী বোঝানো হয়েছে। ফলে একজন কর্মকর্তা তার ইচ্ছামতো যেকোনো বক্তব্য বা আচরণকে অনানুগত্য হিসেবে ধরে শাস্তি দিতে পারেন। আপনি সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর সংজ্ঞাতেও দেখবেন অনানুগত্যের বিষয়ে কিছু নাই।

কর্ম সম্পাদনে ব্যর্থতার ফাঁদ রয়েছে? হ্যাঁ। আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনো কর্মচারী কর্ম সম্পাদনে ব্যর্থ হন, তাহলে তাকেও একই ধরনের শাস্তি দেওয়া যাবে। কিন্তু “ব্যর্থতা” নির্ধারণের মানদণ্ড নেই। উদাহরণস্বরূপ, একজন কর্মকর্তা যদি ২ ঘণ্টার কাজ মাত্র ১০ মিনিটে করে দিতে বলেন, আর কর্মচারী সেটি না পারলে, সেটিকে ব্যর্থতা দেখিয়ে শাস্তি দিতে পারেন।

দুর্নীতি বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান থাকা জরুরি ২০২৫ / কিছু সংশোধন আনা প্রয়োজন যা কর্মচারীদের সহায়ক হবে

সরকারের প্রতি অনানুগত্য বলতে কি বুঝায়? সরকারের প্রতি আনুগত্য বলতে বোঝায় একজন নাগরিকের তার দেশের সরকার ও তার কার্যকারিতা, নিয়ম-কানুন এবং সিদ্ধান্তগুলোর প্রতি সমর্থন ও সম্মান প্রদর্শন করা। এটি সাধারণত জনগণের সরকারের প্রতি বিশ্বাস, আস্থা এবং সহযোগিতা প্রকাশের একটি মাধ্যম।

Caption: Govt. Job New Rules 2025 pdf

চারটি বিষয়কে অপরাধের আওতাভুক্ত ২০২৫ । এভাবে দণ্ড আরোপ করা হলে দোষী কর্মচারী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। তবে, রাষ্ট্রপতির দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না। যদিও আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারবেন।

  1. সরকারি কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের শামিল বা যা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে;
  2. অন্যান্য কর্মচারীর সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন;
  3. অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তাঁর কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তাঁর কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন; এবং
  4. যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তাঁর কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন, তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন। উপরোক্ত চারটি বিষয়ে কারো বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ পাওয়া তাহলে; ক) অভিযোগ গঠনের সাত দিনের মধ্যে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। খ) অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে তাঁকে কেন দণ্ড আরোপ করা হবে না, সে বিষয়ে আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে দণ্ড আরোপ করা যাবে।

স্বেচ্ছাচারিতার আশঙ্কা রয়েছে নতুন আইনে?

হ্যাঁ। এইসব অস্পষ্ট ধারাগুলোর কারণে কোনো কর্মকর্তা চাইলেই একটি অজুহাত তৈরি করে একটি ন্যায়পরায়ণ কর্মচারীকেও চাকরি থেকে অপসারণ করতে পারেন—বিশেষ করে যখন কর্মচারী কোনো অন্যায় আদেশ মানতে অস্বীকৃতি জানায়। আইনগত প্রতিকার নেই সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হলো, এ ধরনের শাস্তির বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারও সুযোগ রাখা হয়নি। ফলে একজন সরকারি চাকরিজীবী পুরোপুরি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দয়া ও মর্জির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন।

নারী কর্মীদের জন্য ঝুঁকি রয়েছে? হ্যাঁ। যদি কোনো নারী কর্মচারী কর্মকর্তার অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হন, তাহলে তাকেও অনানুগত্য বা কর্মদক্ষতার অভাবের অজুহাতে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। এর ফলে নারীদের পেশাগত মর্যাদা ও নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত হবে। মনে রাখা জরুরি “পানি সবসময় নিচের দিকেই গড়ায়।” অর্থাৎ, এই আইন বাস্তবে যাদের উপর প্রয়োগ হবে, তারাই জানেন এর প্রকৃত যন্ত্রণা। যারা নিজেরা সরকারি চাকরিতে নেই, তারা হয়তো এসব কথার গভীরতা উপলব্ধি করতে পারবেন না। এই আইনে আরও অনেক অসংগতি রয়েছে, যা সময়ের সঙ্গে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। এই আইন সংশোধন না হলে এর শিকার হবেন সাধারণ কর্মচারীরাই।

আইন মেনে চলা: নাগরিকদের সরকারের প্রণীত আইন ও বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হয়। এটি আনুগত্যের একটি মৌলিক দিক। ভোটের মাধ্যমে অংশগ্রহণ: রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া এবং সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও পরিবর্তন করার সুযোগ পাওয়া। সরকারের প্রতি সমর্থন: সরকারের কার্যক্রম ও নীতি-নির্ধারণের প্রতি সমর্থন জানানো এবং সরকারের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপন।
দেশের উন্নতি ও উন্নয়নে অবদান রাখা: দেশের অর্থনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতির উন্নয়নে অবদান রেখে সরকারের কাজের প্রতি সহযোগিতা করা। শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করা: সরকারের নির্দেশ মেনে চললে এবং কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না ঘটিয়ে সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা। দেশের প্রতি দায়িত্ব পালন: দেশের প্রতি দায়িত্ব পালন করা, যেমন – কর দেওয়া, সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়া ইত্যাদি।
অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া: অন্য নাগরিকদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং তাদের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষা করা। সরকারের প্রতি আনুগত্য জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি একটি সুস্থ সমাজ ও দেশের ভিত্তি স্থাপন করে। এটি সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। আনুগত্যের মাধ্যমে দেশ ও জনগণের মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি হয়, যা দেশের উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *