Friday, October 10, 2025
Latest:
সর্বশেষ প্রকাশিত

সরকারি কর্মচারীদের ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবি, রাজপথ থেকে এবার ‘বৈষম্যমুক্তির পথ’

দীর্ঘ আন্দোলন এবং রাজপথে কঠোর প্রতিরোধের পর এবার আর রাস্তায় নয়, বৈষম্যমুক্তির পথে হেঁটে ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনরত কর্মচারীরা। যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা, জলকামান ও পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সোচ্চার থাকা এই কর্মচারীরা বলছেন, “আর রাজপথে নামতে চাই না। অনেক হয়েছে। এখন আমাদের বৈষম্যমুক্তির পথ তৈরি হয়েছে, আমরা সেই পথ ধরে বৈষম্যের কবর রচনা করতে চাই।”

কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের দীর্ঘদিনের এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্যই ছিল ন্যায্য বেতন কাঠামো ও বৈষম্যহীন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা। অতীতে বিভিন্ন সময়ে তারা শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা, সমাবেশ এবং মানববন্ধনের মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন। বিশেষ করে, যমুনা অভিমুখে তাদের পদযাত্রা ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যেখানে শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তারা নিজেদের দাবি থেকে এক চুলও সরেননি। সেই সময়ের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ আজও তাদের দৃঢ়তার সাক্ষ্য বহন করে।

আন্দোলনকারীরা মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে পে-স্কেল বাস্তবায়নের জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তাই সরকারের উচিত হবে দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া। তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়িত হলে কর্মচারীদের মধ্যে বিরাজমান হতাশা দূর হবে এবং কর্মক্ষেত্রে নতুন উদ্দীপনা ফিরে আসবে। এটি শুধু তাদের ব্যক্তিগত আর্থিক সুরক্ষাই নিশ্চিত করবে না, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

কর্মচারী নেতারা আরও জানান, তারা সরকারের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে ইচ্ছুক। তবে যদি ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে তারা ভবিষ্যতে কী পদক্ষেপ নেবেন, সে বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে বর্তমানে তাদের মূল লক্ষ্য হলো শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং সকল বৈষম্যের অবসান ঘটানো।

ডিসেম্বর এর মধ্যে কি জাতীয় বেতন কাঠামো জারি হবে?

এই মুহূর্তে ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন জাতীয় বেতন কাঠামো জারি হবে কিনা, তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে যা এই বিষয়ে একটি ধারণা দিতে পারে।

সরকার সম্প্রতি নতুন পে-স্কেল নির্ধারণের জন্য ‘জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫’ গঠন করেছে। এই কমিশনের প্রধান হিসেবে সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, কমিশনকে তাদের প্রথম সভা থেকে ছয় মাসের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এই সময়সীমা অনুসারে, যদি কমিশন দ্রুত কাজ শুরু করে, তবে ডিসেম্বরের মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে, প্রতিবেদন জমা দেওয়া এবং তা বাস্তবায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা—এই পুরো প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ। সরকারের পক্ষ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করার পরই নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হবে।

কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে নতুন পে-স্কেলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন, বিশেষ করে বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে। এই দাবি বিবেচনা করে সরকার ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, যা আপাতত কিছুটা স্বস্তি দেবে। তবে চূড়ান্ত পে-স্কেল কবে নাগাদ কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর এবং সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *