Income Tax AT Source Ibas++ 2025 । সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বেতন থেকে উৎসে আয়কর কর্তন বাধ্যতামূলক?
সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাসিক বেতন থেকে উৎসে আয়কর (Tax Deducted at Source – TDS) কর্তন এখন বাধ্যতামূলক। সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা এক নির্দেশনায় এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
মূল নির্দেশনা ও প্রভাব
অর্থ বিভাগের ডিও (Demi-Official) পত্র এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্দেশনা অনুযায়ী, সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বিল তৈরির সময় আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৮৬(৩) ও অন্যান্য প্রযোজ্য বিধানাবলী অনুসরণ করে উৎসে কর কর্তন করতে হবে।
- কর্তনের ক্ষেত্র: যেসব সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীর বার্ষিক বেতন করমুক্ত সীমা অতিক্রম করবে, তাদের আনুমানিক মোট আয়ের উপর প্রযোজ্য করের গড় হারে উৎসে কর কর্তন করা হবে।
- দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা: ‘ড্রয়িং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসার (DDO)’ বা আয়নকারী ও ব্যয়নকারী কর্মকর্তা হিসেবে বিল প্রস্তুতকারী বা স্বাক্ষরকারী সরকারি কর্মকর্তারা নিজ এবং অধীনস্থদের জন্য বিল তৈরি বা স্বাক্ষরের সময় এই কর কর্তন নিশ্চিত করবেন।
- উদ্দেশ্য: এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হলো স্বেচ্ছামূলক পরিপালন নিশ্চিত করা এবং সরকারি খাত থেকে বর্ধিত হারে রাজস্ব সংগ্রহ করা। যেহেতু নতুন বেতন স্কেলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই উৎসে কর কর্তনের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কর হিসাবের প্রক্রিয়া
সরকারি কর্মচারীকে আয় বছরের শুরুতে তার প্রাপ্য বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাসের ভিত্তিতে করযোগ্য আয় নিরূপণ করতে হবে। এরপর:
- প্রযোজ্য আয়কর থেকে বিনিয়োগজনিত সম্ভাব্য আয়কর রেয়াত ও উৎসে কর/অগ্রিম কর বাদ দিয়ে নীট প্রদেয় করের পরিমাণ নির্ণয় করতে হবে।
- এই নীট প্রদেয় করকে মাসিক ভিত্তিতে ভাগ করে বেতন বিলের আয়কর কর্তন হিসেবে প্রদর্শন করতে হবে।
- কর্তনকারী কর্তৃপক্ষ (হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা) উৎসে কর্তনকৃত করের একটি সনদ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে প্রদান করবেন, যা তিনি তার আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করবেন।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: উৎসে মাসিক কর কর্তন করা হলেও, এটি কোনোভাবেই চূড়ান্ত করদায় নয়। বছর শেষে অন্যান্য আয় থাকলে বা না থাকলেও কর্মচারীকে অবশ্যই মোট আয় নিরূপণ করে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে এবং প্রদেয় কর পরিশোধ করতে হবে। উৎসে কর্তনকৃত কর এক্ষেত্রে অগ্রিম কর হিসেবে গণ্য হবে এবং চূড়ান্ত প্রদেয় করের সাথে সমন্বয় করা হবে।
এই কঠোর পরিপালনের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনে করছে।


