নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নে কঠোর আলটিমেটাম ২০২৫ । পরিবারসহ রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি সরকারি কর্মচারীদের?
আর্থিক কষ্ট আর মানসিক শান্তি নষ্টের কারণ—এই উপলব্ধি থেকে নবম পে-স্কেল দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সরকারি কর্মচারীরা। তাদের সাথে এবার রাস্তায় নামতে প্রস্তুত সরকারি কর্মচারীদের পরিবারও।
দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টার সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতিবাদে এবং দ্রুত গেজেট প্রকাশের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ।
মূল দাবি ও আলটিমেটাম
জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ’ নিম্নলিখিত প্রধান দাবিগুলো পেশ করেছে:
-
নতুন বেতন কাঠামো: ১২টি গ্রেডে ১:৪ অনুপাতে সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
-
গেজেট প্রকাশের সময়সীমা: আগামী ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নবম পে-স্কেলের গেজেট প্রকাশ করতে হবে এবং তা ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে কার্যকর করতে হবে।
-
অন্যান্য সুবিধা পুনর্বহাল: ২০১৫ সালের পে-স্কেল থেকে বাদ পড়া ৩টি টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল করতে হবে এবং বেতন জ্যেষ্ঠতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
⚠️ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
ঐক্য পরিষদের নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, সরকার পে-কমিশনের সুপারিশ জমা এবং গেজেট প্রকাশের সময়সীমা না মানলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে।
-
কর্মসূচি: ৩০ নভেম্বরের মধ্যে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না এলে, ৫ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মহাসমাবেশ ও টানা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
-
নির্বাচনী দায়িত্ব বর্জন: পে-স্কেল বাস্তবায়ন না হলে প্রায় ১৮ লাখ কর্মচারী নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে বিরত থাকবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
আর্থিক কষ্ট ও মানসিক শান্তির প্রশ্ন
কর্মচারী নেতারা দাবি করেন, বর্তমান মূল্যস্ফীতির বাজারে পুরোনো বেতন কাঠামো দিয়ে জীবনধারণ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। তাদের আর্থিক দুর্দশা কেবল দৈনন্দিন খরচ মেটানোতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা পরিবারগুলোর মানসিক শান্তিও নষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই কারণে এবার পরিবারের সদস্যরাও আন্দোলনে যুক্ত হতে প্রস্তুত বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান যে, সরকারি কর্মচারীদের নতুন পে-স্কেলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নয়, বরং আগামী নির্বাচিত সরকার নেবে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার বেতন কমিশনের প্রতিবেদন (বেতন কাঠামো) চূড়ান্ত করে যাবে। সরকারি কর্মচারীরা এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এই কঠিন পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মচারী ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারাও। তারা কর্মচারীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

