iBAS++ । আইবাস সম্পর্কিত তথ্য

ibas++ এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

ibas++ এ থাকবে কর্মচারীদের ডাটাবেজ, যার ভিত্তিতে বেতন বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রস্তুত হবে এবং কর্মকর্তা ও ডিডিওগণ তা অনলাইনে দাখিল করতে পারবেন। ভ্রমণ ভাতা বিলসহ অন্যান্য বিলও অনলাইনে দাখিল করা যাবে। স্ব স্ব বিল অনুমােদন এবং চেক বা ইএফটি প্রদানের প্রতিটি পর্যায় ডিডিওগণ অনলাইনে দেখতে পারবেন।

ক. আইবাস++ এর বাজেট প্রণয়ন 

আইবাস’ এর মাধ্যমে দুটি প্রক্রিয়ায় বাজেট প্রণয়ন করা যায়। প্রথমত মাঠ পর্যায়ের দপ্তরগুলাে মন্ত্রনালয় থেকে প্রদত্ত সম্ভাব্য প্রাথমিক ব্যয়সীমার সাথে সামঞ্জস রেখে মন্ত্রণালয়ের কৌশলগত উদ্দেশ্য ও অগ্রাধিকার খাত বিবেচনায় নিয়ে বাজেট উপাত্ত এ সিস্টেমে এন্ট্রি করে তা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে অর্থ বিভাগে প্রেরন করে।

এভাবে বাজেট প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ প্রস্তুত করে মাঠ পর্যায়ের দপ্তর, অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় ধাপে ধাপে বাজেট প্রণয়ন করে অনলাইনে অর্থ বিভাগে দাখিলের পর অর্থ বিভাগ ত্রিপক্ষীয় সভার আয়ােজন করে। ত্রিপক্ষীয় সভার ঐক্যমতের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়সমূহ প্রাথমিক ব্যয়সীমা চুরান্ত করে পুনরায় অর্থ বিভাগে প্রেরন করে।

অতঃপর অর্থবিভাগ সংসদে অনুমােদনের জন্য জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করে। আইবাস থেকেই এ সংক্রান্ত যাবতীয় দলিল, প্রতিবেদন ও বিশ্লেষণ তৈরি করা হয়ে থাকে।

খ. জেনাবেল লেজার 

জেনারেল লেজার মডিউলটি হচ্ছে  ibas এর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ বিন্দু – যা পর্দার অন্তরালে থেকে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে। বাজেট অনুমােদনের পর তা এই মডিউলের ‘বাজেট উপযােজন’ সাব-মডিউলের মাধ্যমে লােড করা হয়।

এরপর ibas এ যত লেনদেন ঘটে থাকে, তা সে বরাদ্দ বিভাজন হােক বা অর্থ ব্যয় হােক, সকল কিছুই জেনারেল লেজারে অন্তর্ভুক্ত হয় এবং সংশ্লিষ্ট শ্রেণিবিন্যাস কোডের বিপরীতে স্থিতি হালনাগাদ করা হয়।

এই মডিউলের মাধ্যমে প্রতিটি হিসাব কোডের বিপরীতে সরকারের আয়-ব্যয়ের সর্বশেষ হিসাব যেমন তৎক্ষণাৎ পাওয়া যাবে, তেমনি সরকারের আর্থিক সম্পদ ও দায় এবং সংশ্লিষ্ট অর্থপ্রবাহের একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র ও পাওয়া যাবে।

বাজেট বাস্তবায়ন মডিউলের মাধ্যমে সংসদ কর্তৃক অনুমােদিত বাজেট প্রথমে জেনারেল লেজারে লােড করা হয়, যার ফলে বরাদ্দ বিভাজন, অর্থ অবমুক্তি, ক্রয়াদেশ প্রদান এবং ব্যযের ক্ষেত্রে অনুমােদিত বাজেটের নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করা যায়।

বাজেট বাস্তবায়ন মডিউলের মাধ্যমে নিম্নোক্ত কাজগুলি সম্পন্ন করা যায়:

বরাদ্দ বিভাজন 

বাংলাদেশ সরকারের বাজেট প্রণীত হয় জাতীয় পর্যায়ে, অর্থাৎ কোন একটি দপ্তরের সারা দেশব্যাপী সকল অফিসের কোন একটি খাতের জন্য একটি মাত্র সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। যেমন, বাজেটে বলা থাকে সারা দেশের সকল উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের ভ্রমণ ভাতার জন্য বরাদ্দ কত।

কিন্তু এই অর্থ ব্যযের পূর্বে অবশ্যই প্রতিটি উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের ভ্রমণ ভাতা বাবদ পৃথক বরাদ্দ নির্ধারণ করে দিতে হয়। এই প্রক্রিয়াটি বরাদ্দ বিভাজন নামে পরিচিত ibas++ এর বরাদ্দ বিভাজন মডিউলের মাধ্যমে সুষ্ঠুরূপে বরাদ্দ বিভাজন করা যায়।

বাজেটের অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া বা বরাদ্দের অতিরিক্ত ব্যয় সফটওয্যারটির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। তাছাড়া বাজেট বরাদ্দ এবং ব্যয়ের বিভিন্ন প্রয়ােজনীয় বিশ্লেষণ সফটওয্যারটি সরবরাহ করতে সক্ষম।

অর্থ অবমুক্তি 

নগদ ব্যবস্থাপনার (Cash Management) – অংশহিসেবে উন্নয়ন প্রকল্প ও কর্মসূচির ক্ষেত্রে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে অর্থ অবমুক্ত করার পর ব্যয় করা হয়। আইবাস’- এ এই কাজটি সুষ্ঠুভাবে করার ব্যবস্থা রযেছে যার ফলে একদিকে যেমন বাজেটের অতিরিক্ত অবমুক্তি এবং অবমুক্তির অতিরিক্ত ব্যয় নিবারণ করা যায়, তেমনি এ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ তৈরি করা যায়, যা নগদ ব্যবস্থাপনায় মূল্যবান ভূমিকা পালন করে।

পুনঃউপযােজন 

সারা বছর ধরে প্রযােজনের নিরিখে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা অর্থ বিভাগ কর্তৃক পূনঃউপযােজনের প্রযােজন হয়ে থাকে। বাজেট বাস্তবায়ন মডিউলের মাধ্যমে এই কাজটি সুচারুরূপে সম্পন্ন করা যায়।

এই মডিউলের মাধ্যমে ডিডিওগণ কর্তৃক অনলাইনে ক্রয়াদেশ ও বিল দাখিল থেকে শুরু করে বিল নিরীক্ষণ এবং অনুমােদনের প্রতিটি ধাপ, গ্রহীতাকে চেক বা ইএফটি প্রদান, ব্যাংকে ইলেকট্রনিক অ্যাডভাইস প্রেরণ, ব্যাংক থেকে প্রেরিত ইলেকট্রনিক ডেবিট ও ক্রেডিট স্ক্রল সিস্টেমে আপলােডের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাংক হিসাব সমন্বয় – ইত্যাদি কর্মকাণ্ড সম্পন্ন হবে।

জেনারেল লেজার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত থাকার ফলে এই মডিউল প্রযােজ্য ক্ষেত্রে বাজেট যাচাই করবে এবং বরাদ্দের অতিরিক্ত খরচ রােধ করবে।

এ ছাড়া পেনশনভােগীদের একটি ডাটাবেজও সিস্টেমে থাকবে যার ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইএফটির মাধ্যমে পেনশন প্রদান সম্ভব হবে। ibas++ এ সরবরাহকারীদের ডাটাবেজ সংরক্ষণ করা হবে, যার ভিত্তিতে তাদেরও ইএফটির আওতায় আনা সম্ভব হবে।

আইবাস সিস্টেমটি বিদ্যমান এবং প্রস্তাবিত নতুন বাজেট ও হিসারক্ষণ শ্রেণিবিস্যাস পদ্ধতির উপযােগী, শুধু তাই নয়, বরং পরবর্তীকালে শ্রেণিবিস্যাস পদ্ধতিতে কোন পরিবর্তন হলে তার সাথেও খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *