২০ গ্রেডের কর্মচারিদের পদোন্নতির দাবি ২০২৫ । সরকারি চাকরিতে উচ্চশিক্ষিত হয়েও বঞ্চিত অফিস সহায়করা?
ঢাকা, ২৬ আগস্ট ২০২৫ সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ২০তম গ্রেডভুক্ত কর্মচারিরা—যাদের অধিকাংশই পিওন বা অফিস সহায়ক পদে কর্মরত—দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি ও বেতন বৈষম্য দূর করার দাবি জানাচ্ছেন। বর্তমানে এসব পদে কর্মরত অনেকেই উচ্চ মাধ্যমিক, এমনকি স্নাতক ডিগ্রিধারী হলেও তাদের পদোন্নতির কোনো সুযোগ নেই। ফলে তারা একই পদে বছরের পর বছর কর্মরত থেকে সীমিত বেতনে পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
কর্মচারিদের অভিযোগ, সর্বনিম্ন বেতন গ্রেডে থেকে ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা এতটাই সীমিত যে জীবনযাত্রার ব্যয় সামলানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। একজন অফিস সহায়ক মাসে গড়ে ২০-২৫ হাজার টাকার বেশি হাতে পান না, যা দিয়ে পরিবারের মৌলিক চাহিদা পূরণ সম্ভব হয় না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে ২০ গ্রেডভুক্ত কর্মচারিদের জন্য পদোন্নতির সুনির্দিষ্ট কাঠামো থাকা জরুরি। দীর্ঘ ৫-৭ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তাদেরকে ধাপে ধাপে ১৮ বা ১৬ গ্রেড পর্যন্ত উন্নীত করার ব্যবস্থা নেওয়া হলে কর্মে আগ্রহ ও দক্ষতা বাড়বে। পাশাপাশি তাদের জন্য টিফিন, চিকিৎসা, বাড়িভাড়া এবং যাতায়াত ভাতাও যুগোপযোগী হারে বাড়ানো উচিত।
সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে জোরালো দাবি উত্থাপিত হয়েছে। তারা বলছেন, “পিওন বা অফিস সহায়ক পদে যোগ দিলেও বর্তমানে অনেকেই উচ্চশিক্ষিত। তাদের মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হলে কর্মচারিদের মধ্যে হতাশা কমবে এবং কর্মপরিবেশ আরও ইতিবাচক হবে।”
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, নিম্নগ্রেডের কর্মচারিদের বেতন-ভাতা বাড়ানো কেবল মানবিক দায়িত্বই নয়, বরং এটি প্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মচারিদের মনোবল জোরদার করার কার্যকর উপায়।
সার্বিকভাবে বলা যায়, সময়োপযোগী পদোন্নতির সুযোগ ও বেতন কাঠামো সংস্কার ছাড়া ২০ গ্রেডভুক্ত কর্মচারিরা বঞ্চিত থেকে যাবে—যা প্রশাসনিক কাঠামোতে বৈষম্য আরও বাড়াবে।
প্রস্তাবিত পদোন্নতি ও বেতন কাঠামো (২০ গ্রেডভুক্ত কর্মচারিদের জন্য)
গ্রেড | পদবী (প্রস্তাবিত) | অভিজ্ঞতা/যোগ্যতা শর্ত | প্রস্তাবিত মূল বেতন (টাকা) | বিশেষ ভাতা (টিফিন/যাতায়াত/চিকিৎসা) |
---|---|---|---|---|
২০ | অফিস সহায়ক/পিওন | প্রাথমিক নিয়োগ | ২৫,০০০ | ৫,০০০ |
১৯ | সিনিয়র অফিস সহায়ক | ন্যূনতম ৫ বছর চাকরি | ২৮,০০০ | ৬,০০০ |
১৮ | অফিস সহকারী (প্রমোশন) | ন্যূনতম ৮ বছর চাকরি বা স্নাতক | ৩২,০০০ | ৭,০০০ |
১৭ | সিনিয়র অফিস সহকারী | অভিজ্ঞতা + প্রশিক্ষণ | ৩৬,০০০ | ৮,০০০ |
১৬ | প্রশাসনিক সহায়ক কর্মকর্তা | দীর্ঘ অভিজ্ঞতা + দক্ষতা | ৪০,০০০ | ১০,০০০ |
এ প্রস্তাবিত কাঠামো অনুসারে ২০ গ্রেডে যারা দীর্ঘদিন চাকরি করছেন, তারা ধাপে ধাপে পদোন্নতির মাধ্যমে ১৬ গ্রেড পর্যন্ত উন্নীত হওয়ার সুযোগ পাবেন। এতে তাদের জীবনের মানোন্নয়ন হবে এবং প্রশাসনের কার্যক্ষমতাও বাড়বে।
-
২০ গ্রেড: মূল বেতন ২৫,০০০ + ভাতা ৫,০০০
-
১৯ গ্রেড: মূল বেতন ২৮,০০০ + ভাতা ৬,০০০
-
১৮ গ্রেড: মূল বেতন ৩২,০০০ + ভাতা ৭,০০০
-
১৭ গ্রেড: মূল বেতন ৩৬,০০০ + ভাতা ৮,০০০
-
১৬ গ্রেড: মূল বেতন ৪০,০০০ + ভাতা ১০,০০০
এটি গ্রাফে দেখালে বেতন এবং ভাতা ধাপে ধাপে বৃদ্ধির একটি উর্ধ্বমুখী লাইন তৈরি হবে, আর গ্রেড সংখ্যা কমার সাথে সাথে (২০ → ১৬) পদোন্নতি বোঝানো যাবে।