সর্বশেষ প্রকাশিত

পে স্কেলের দাবিতে উত্তাল কর্মচারী সমাজ: আল্টিমেটাম উপেক্ষা, তফসিল পেছানোর দাবি!

সরকারি, আধা–সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পুনর্নির্ধারণে গঠিত জাতীয় বেতন কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দেওয়ার জন্য কর্মচারী সংগঠনগুলোর বেঁধে দেওয়া ৩০ নভেম্বরের আল্টিমেটাম শেষ হলেও রিপোর্ট জমা হয়নি। এতে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা এখন সরাসরি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নতুন পে স্কেলের প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তফসিল ঘোষণার তারিখ পেছানোর মতো কঠোর অবস্থানের দিকে এগোচ্ছেন।

⚠️ থমকে আছে চূড়ান্ত সুপারিশ, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

জাতীয় বেতন কমিশন-২০২৫ (যা নবম পে স্কেলের সুপারিশ তৈরির কাজ করছে) গত জুলাইয়ের শেষে গঠিত হয় এবং প্রজ্ঞাপনে তাদের ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। তবে একাধিকবার সচিবদের সাথে বৈঠক হলেও কমিশন এখন পর্যন্ত তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দিতে পারেনি। এর মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক উপদেষ্টা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, জাতীয় নির্বাচনের পর নতুন সরকার এলে পে স্কেল কার্যকর হতে পারে।

এই মন্তব্যে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও অস্বস্তি আরও বেড়েছে। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, যে সরকার কমিশন গঠন করেছে, সেই সরকারকেই পে স্কেল ঘোষণা করতে হবে।

️ “আগে পরিবারকে বাঁচান, তারপর নির্বাচন!”

পে স্কেল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা এই অচলাবস্থার মধ্যে সরকারি কর্মচারী ঐক্য পরিষদ এবং অন্যান্য সংগঠন আরও কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে। তাদের মূল দাবিগুলো হলো:

  • তফসিল ঘোষণার আগে প্রজ্ঞাপন: যেকোনো মূল্যে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নবম পে স্কেলের গেজেট প্রকাশ করতে হবে।

  • ১৫ ডিসেম্বরের ডেডলাইন: তারা আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারের প্রতি চূড়ান্ত আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

  • নির্বাচন পেছানোর দাবি: কর্মচারীরা তাদের জীবনযাত্রার মান রক্ষার জন্য পে স্কেলের প্রজ্ঞাপনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে বলছেন। মূল্যস্ফীতির এই সময়ে একই স্কেলে প্রায় এক দশক কাজ করায় তারা ক্ষুব্ধ। তাদের কেউ কেউ সরাসরি মন্তব্য করছেন, “আগে কর্মচারী ও তাদের পরিবারকে বাঁচতে দিন! দরকার হলে তফসিল ঘোষণা পিছিয়ে দিন!”

অর্থনৈতিক চাপ বনাম কর্মচারীদের ক্ষোভ

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারি কর্মচারীদের বেতন সংশোধন স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও, নতুন পে স্কেল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখা দেয়, যা বেসরকারি চাকরিজীবীদেরও চাপে ফেলে। অন্যদিকে, সরকারের বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতা এবং রাজস্ব আহরণের মন্থর গতির কারণে অন্তর্বর্তী সরকার পে স্কেল বাস্তবায়নের দায়ভার নির্বাচিত সরকারের ওপর দিতে চাইছে।

তবে, কর্মচারীরা বলছেন, বিগত এক দশকে জীবনযাত্রার ব্যয় বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায়, কেবল ৫% বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট তাদের জন্য যথেষ্ট নয়। তারা আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নবম পে স্কেল কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।

আন্দোলনের প্রস্তুতি

আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার পর এখন সরকারি কর্মচারীরা আন্দোলনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ৫ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যেখানে নতুন পে স্কেল বাস্তবায়নের দাবি জোরালোভাবে উত্থাপন করা হবে।

৫ ডিসেম্বরে কি মহা সমাবেশ হচ্ছে?

হ্যাঁ, পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ৫ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পে কমিশনের সুপারিশ জমা দেওয়ার আল্টিমেটাম পার হওয়ার পর, নতুন পে স্কেলের প্রজ্ঞাপন দ্রুত জারির দাবিতে সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলো এই কঠোর কর্মসূচি (ঢাকায় মহাসমাবেশ) পালনের ঘোষণা দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *