প্রত্যাখ্যাত ৫০০ টাকা বৃদ্ধি ২০২৫ । ২০% বাড়িভাড়ার দাবিতে ফের আন্দোলনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা?
এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা মাসিক ৫০০ টাকা বৃদ্ধির সরকারি আদেশ প্রত্যাখ্যান করে ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া এবং অন্যান্য ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে ফের আন্দোলনে নামছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাড়িভাড়া ভাতা ১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করার পরিপত্র জারির পরই এই প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা আসে।
প্রত্যাখ্যান ও আন্দোলনের ডাক:
- গত ৫ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা ১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে পরিপত্র জারি করা হয়।
- তবে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা এই ৫০০ টাকা বৃদ্ধিকে ‘প্রহসন’ ও ‘অসন্তোষজনক’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
- ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’-এর পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
- শিক্ষকদের মূল দাবি হলো— মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া, ১,৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা প্রদান করা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রস্তাব:
শিক্ষক-কর্মচারীদের কঠোর আন্দোলনের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে।
- গত ৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ) শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া নির্ধারণের একটি নতুন প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
- এই প্রস্তাবে ২০ শতাংশ, ১৫ শতাংশ এবং ১০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া দেওয়া হলে প্রতি মাসে ও বছরে কত টাকা অতিরিক্ত প্রয়োজন হবে, তার একটি আর্থিক বিবরণীও উল্লেখ করা হয়েছে। তথ্যানুযায়ী, ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া দিতে বছরে প্রায় ২,৩৫১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা প্রয়োজন।
- শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দাবির পটভূমি:
বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মূল বেতনের ওপর শতাংশ হারে নয়, বরং নির্ধারিত অঙ্কে বাড়িভাড়া (১,৫০০ টাকা), চিকিৎসা ভাতা (৫০০ টাকা) এবং সীমিত আকারে উৎসব ভাতা পেয়ে থাকেন, যা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চেয়ে অনেক কম। এই বৈষম্য দূরীকরণ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন বেসরকারি শিক্ষকরা। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে পূর্বের একটি সভায় ২০ শতাংশ বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় ৫০০ টাকা বৃদ্ধির পরিপত্র জারি করায় শিক্ষক-কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, তাদের মূল দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারি নিয়মে সুযোগ-সুবিধা না পাওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। নতুন প্রস্তাবের ওপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের দিকেই এখন তাকিয়ে আছে দেশের এমপিওভুক্ত প্রায় ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী।