নবম পে-স্কেল নিয়ে আলোচনা ‘ফলপ্রসূ’ ২০২৫ । ডিসেম্বরের মধ্যে গেজেট জারির আশা?

নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে সরকারের আলোচনা ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ হয়েছে এবং ডিসেম্বরের মধ্যেই গেজেট জারি হওয়ার জোর আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ সরকারি গাড়িচালক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব মো. হুমায়ুন কবীর। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে বৈঠকে অংশ নেওয়ার পর তিনি এই তথ্য জানান।

🤝 আলোচনায় অগ্রগতি ও ইতিবাচক সাড়া

বৈঠক শেষে মো. হুমায়ুন কবীর জানান, তারা প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে বিস্তারিতভাবে পে-স্কেল বাস্তবায়নের জন্য যুক্তি সহকারে আলোচনা করেছেন এবং একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে উপস্থিত না থাকায় কর্মকর্তারা স্মারকলিপি গ্রহণ করে তা প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। স্কেল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ইনশা’আল্লাহ, ডিসেম্বরের মধ্যেই নবম পে–স্কেলের গেজেট জারি হবে বলে আশা করছি।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে ফলো-আপ আলোচনাও হবে এবং তাঁরা বিশ্বাস করেন ডিসেম্বরের মধ্যেই কাঙ্ক্ষিত পে-স্কেল বাস্তবায়নের ঘোষণা আসবে।

⚠️ দ্রুত গেজেট প্রকাশের তাগিদ: ১৫ ডিসেম্বরের আল্টিমেটাম

দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নেতারা জানান, তাঁরা ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পে-স্কেলের গেজেট প্রকাশের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। কর্মকর্তাদের কাছে এই দাবি প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করার আহ্বানও জানানো হয়।

নেতারা সতর্ক করে বলেন, “ডিসেম্বরের মধ্যে গেজেট প্রকাশ না হলে কর্মচারী অঙ্গনে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে তা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। গড়িমসি নয়—১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই গেজেট প্রকাশ করে ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে নবম পে–স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে।”

তাঁরা আরও বলেন, ১৫ ডিসেম্বরের পরে কর্মচারীরা নেতাদের আর মানবে না এবং পেটের তাড়নায় তাঁরা নিজেরাই রাস্তায় নামতে বাধ্য হবেন। সরকারকে যেকোনো পরবর্তী পরিস্থিতির দায় নিতে হবে বলেও তাঁরা হুঁশিয়ারি দেন।

📜 প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর

দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের মুখ্য সমন্বয়ক মো. ওয়ারেছ আলীর নেতৃত্বে সদস্য সচিব মাহমুদুল হাসান, সমন্বয়ক সালজার রহমান, মোঃ সেলিম মিয়া, রফিকুল আলম, খায়ের আহমেদ মজুমদার, মাহবুবুর রহমান তালুকদার, হুমায়ুন কবির, আব্দুর রাজ্জাকসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠক শেষে নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন সংক্রান্ত একটি স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নেতৃবৃন্দ পরিচালক (প্রশাসন)–এর হাতে তুলে দেন। তাঁরা আশা প্রকাশ করেছেন যে সরকার দ্রুত গেজেট জারি করে কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করবে।

🚗 গাড়িচালক সমিতির মূল ৯ দফা দাবি

নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে সরকারি পেশাজীবী সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছে। এর আগে সরকারি গাড়িচালক সমিতি মোট ৯ দফা দাবি তুলে ধরেছিল। দাবিগুলো হলো:

• বৈষম্যমুক্ত নবম জাতীয় পে-কমিশন গঠন।

• পে-কমিশনে বাংলাদেশ সরকারি গাড়িচালক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিনিধি রাখা।

• পে-স্কেলে প্রত্যাহারকৃত ভারী যানবাহন, টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেডসহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পুনর্বহাল করা।

• পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বপর্যন্ত ৪০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রজাতন্ত্রের সব কর্মচারীকে প্রদান করা।

• সরকারি গাড়িচালক পদটি কারিগরী পদ হিসেবে ঘোষণা করা।

• সরকারি গাড়িচালক পদের নাম পরিবর্তন করে ‘মোটরট্রান্সর্পোট অপারেটর’ করা।

• সরকারি গাড়িচালক পদটি ব্লক পোস্ট বাতিলপূর্বক যোগ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতির ব্যবস্থা করা।

• সরকারি গাড়িচালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন পদ্ধতি সহজিকরণ।

• গাড়িচালকদের ঝুঁকিভাতা ও রেশনব্যবস্থা চালু, আউট সোর্সিং প্রথা বাতিলপূর্বক স্থায়ী সকল সরকারি গাড়িচালক শূণ্যপদে অবিলম্বে নিয়োগ প্রদান করা।